ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সুস্বাদু মণ্ডা। একসময় কলাপাতা, পদ্মপাতায় মুড়িয়ে মণ্ডা বিক্রি করা হতো। এখন পাতলা কাগজে মুড়িয়ে বক্সে করে বিক্রি করা হয়। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার নাম নিলেই চলে আসে মণ্ডার নাম।
মন্ডা নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। ময়মনসিংহ শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মুক্তাগাছা। দুই শতাধিক বছর আগে মুক্তাগাছার প্রসিদ্ধ মন্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন। শিয়রে দাঁড়িয়ে এক ঋষি তাকে আদেশ দিচ্ছেন মন্ডা মিষ্টি তৈরি কর। পরদির গোপাল ঋষির আদেশে চুল্লি খনন শুরু করলেন। দৈবাৎ উদয় হলেন সাধু। তিনি হাত বুলিয়ে দিলেন চুল্লিতে। শিখিয়ে দিলেন মণ্ডা তৈরির কলাকৌশল গোপালকে। দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি হলো মন্ডা। গোপাল তার নব উদ্ভাবিত মন্ডা পরিবেশন করলেন তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর রাজদরবারে। মন্ডা খেয়ে মহারাজা পেলেন পরম তৃপ্তি , আর বাহবা দিলেন গোপালকে। মুক্তাগাছার গোপাল পালের মন্ডা। শুরু হলো মণ্ডার যাত্রা। গোপাল সম্বন্ধে জানা যায়, বাংলা ১২০৬ সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। নবাব সিরাজদৌলার মৃত্যুর পর গোপাল মাতৃভূমি রাজশাহীতে চলে আসেন। পরে বাংলা ১২৩০ সালে তিনি মুক্তাগাছায় বসত গড়েন। প্রথম মণ্ডা তৈরি হয় বাংলা ১২৩১ সালে।
গরুর মাংসের শুটকি ময়মনসিংহের জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবার। আগেকার দিনে নানী দাদীরা গরুর মাংসকে সংরক্ষণ করতো রোদে শুকিয়ে শুটকি তৈরি করে। গরুর মাংসের শুটকি এই অঞ্চলের প্রতিটা ঘরের স্পেশাল খাবার হিসেবে পরিচিত।